সালেহ্ বিপ্লব: [২] শেখ হাসিনা বলেন, সরকার সুযোগ সৃষ্টি করেছে, তবে নারীদেরও এগিয়ে আসতে হবে। ঘরে বসে থাকবেন না। সমাজের জন্যও নারীদের অনেক কাজ করতে হবে। অর্থনৈতিকভাবে আমাদের আরও অগ্রসর হতে হলে নারী ও পুরুষকে সমভাবে শ্রম দিতে হবে। কারণ সমাজের অর্ধেক জনশক্তি নারী। বাসস

[৩] আন্তর্জাতিক নারী দিবস উদযাপন উপলক্ষ্যে শুক্রবার সকালে নগরীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। নানা প্রতিবন্ধকতা এবং চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জনের স্বীকৃতি হিসেবে প্রধানমন্ত্রী জাতীয় পর্যায়ে পাঁচ নারীকে ‘সেরা জয়িতা পুরস্কার-২০২৩’ প্রদান করেন।

[৪] শেখ হাসিনা বলেন, আমরা এগিয়ে যাচ্ছি কারণ আমরা নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করেছি। আমাদের নারীরা কখনই পিছিয়ে থাকবে না।

[৫] জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রদত্ত নারীদের সাংবিধানিক অধিকার নিশ্চিত করার কথা উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, তাঁর দলই দেশের একমাত্র রাজনৈতিক দল, যারা সংবিধান ও ইশতেহারে নারী ও পুরুষের সমান অধিকারের কথা উল্লেখ করেছে। শুধু বলার জন্য নয়, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে তা বাস্তবায়ন করে দেখিয়েছে।

[৬] এক পরিসংখ্যানে নারীদের ৪৩ শতাংশ শ্রমের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, তারা আরো অতিরিক্ত কাজ করেন। এমনকি অফিস থেকে বাড়ি ফিরেও কাজ করতে হয় যা হিসাব করা হচ্ছে না।

[৭] প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলেছি, এখন আমাদের লক্ষ্য ২০৪১ সাল নাগাদ স্মার্ট নাগরিক, স্মার্ট সরকার,স্মার্ট অর্থনীতি এবং স্মার্ট সোসাইটি গড়ে তোলা। যদি স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার এই যাত্রায় নারীদের আরও বেশি সম্পৃক্ত করা যায় তাহলে আমরা দ্রুত আমাদের কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারব।

[৮] দেশে প্রথম মুন্সীগঞ্জ জেলায় মহিলা পুলিশ সুপার নিয়োগ, সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনী এবং বর্ডার গার্ড বাংলাদেশে (বিজিবি) নারীদের নিয়োগের কথা উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, আমি তাদের যেখানে নিয়োগ দিয়েছি তারা সেখানে তাদের কাজের ক্ষেত্রে বিরাট দক্ষতা প্রদর্শন করেছে, আমি তাদের প্রশংসা না করে পারি না। যদি নারীদের এই সুযোগ দেয়া না হতো তাহলে এই সাফল্য আসতো না। আমার বাবা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সব সময় বলতেন, অর্থনৈতিকভাবে মেয়েদের মুক্তিই সবচেয়ে বড় মুক্তি। 

[৯] এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) এবং বিশ্বব্যাংকে  দুই নারীর নিয়োগের বিষয়টি তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, দুই নারী সচিব এই সংস্থাগুলোর জন্য কাজ করার করার সুযোগ পেয়েছেন। আমি সেটা প্রমাণ করতে চাই বাংলাদেশি নারীদের শুধু দেশেই নয়, আন্তর্জাতিক পর্যায়েও কাজ করার দক্ষতা রয়েছে। তারপর থেকে আমরা অনেক দূর এগিয়ে এসেছি।

সালেহ্ বিপ্লব: [২] প্রতিকূলতা ও চ্যালেঞ্জকে অতিক্রম করে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জনের স্বীকৃতিস্বরূপ ৫ নারীকে জাতীয় পর্যায়ে ‘সেরা জয়িতা পুরস্কার-২০২৩’ প্রদান করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আন্তর্জাতিক নারী দিবস-২০২৪ উপলক্ষে শুক্রবার সকালে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে পুরস্কার প্রাপ্তদের মধ্যে এই পুরস্কার তুলে দেন তিনি। বাসস

[৩] পুরস্কারপ্রাপ্তরা হলেন; আনার কলি (অর্থনৈতিক), কল্যাণী মিঞ্জি (শিক্ষা ও কর্মসংস্থান), কমলি রবি দাশ (সফল মা), জাহানারা বেগম (নিপীড়ন প্রতিরোধ) এবং পাখি দত্ত হিজড়া (সামাজিক উন্নয়ন)।

[৪] মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী সিমিন হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন মন্ত্রণালয়ের সচিব নাজমা মোবারেক।

[৫] জয়িতা পুরস্কার প্রাপ্তদের পক্ষ থেকে কল্যাণী মিঞ্জি তার অনুভূতি ব্যক্ত করেন।

[৬] পুরস্কার প্রাপ্তদের প্রত্যেককে এক লাখ টাকার চেক, ক্রেস্ট, স্যাশ (উত্তরীয়) ও সনদপত্র দেওয়া হয়।

[৭] অনুষ্ঠানের শুরুতে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নারী ও কর্মকাণ্ডের ওপর একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। 

[৮] ‘জয়িতা’ (বিজয়ী), একজন নারী যিনি সকল বাধা জয় করে সাফল্যের শিখরে পৌঁছান, মানে এটি একজন সংগ্রামী ও অদম্য নারীর ছদ্মনাম। সরকার পাঁচটি বিভাগে জয়িতাদের পুরস্কার প্রবর্তন করেছে।